শিরোনাম
- হোম
- থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইসলাম
আপডেটঃ Sat, Dec 14, 2024 9:26 AM
থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইসলাম
স্রষ্টা কর্তৃক বান্দার জন্য মনোনিত পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হলো ইসলাম।ইসলাম কোনো ছেলেখেলা ধর্ম নয় যে,কিছু মানলাম কিছু এড়িয়ে গেলাম বরং সম্পূর্ণ মানাই ইসলাম।ইসলামে মানব জীবনের সকল রীতি নীতি নির্ধারিত ও সুস্পষ্ট।চিরাচরিতই ইসলাম সকল গোড়ামী,শঠতা ও অস্পষ্টতাকে পরিহার করেছে।সূরা আশ-শু’রার ১৩ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেন,”তিনি তোমাদের জন্য দ্বীন বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন”।সূরা মায়িদার ৩ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,”আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম”।আফসোস যে,ইসলামে সকল কিছু নির্ধারিত থাকলেও বর্তমান মুসলিম সমাজ আধুনিকতার কবলে অপসংস্কৃতিকে ধারণ করছে।যার অন্যতম উদাহরণ হলো ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ বা নববর্ষ উদযাপন।ইহা স্পষ্টতই ইসলামী রীতি বিরোধী।আমরা বর্তমান মুসলিম সমাজ ইসলামী সংস্কৃতির পাশাপাশি বিধর্মী সংস্কৃতি লালনের মধ্য দিয়ে মিশ্র জাতীতে রূপ নিয়েছি।
থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন করে আমরা যাদরেকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করছি,তারা প্রকৃতপক্ষে আমাদের শত্রু। তারা কখনো আমাদের বন্ধু হবে না,যে যাবত আমরা আমাদের দ্বীন ত্যাগ করে তাদের ধর্মের অনুসরণ না করি।তারা আমাদের দ্বীন ও নবীকে নিয়ে উপহাস করে।আল্লাহ তায়ালা বলেন.”হে মুমিনগণ,তোমরা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না।যারা তোমাদের দ্বীনকে উপহাস ও খেল তামাশারূপে গ্রহণ করেছে,তাদের মধ্যে থেকে তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে ও কাফিরদেরকে।আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর,যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো”।সূরা মায়েদার ৫১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ আরো বলেন,”হে মুমিনগণ!ইহুদী ও নাসারাদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না।তারা একে অপরের বন্ধু।আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে সে নিশ্চয়ই তাদের একজন।নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিম কাওমকে হিদায়াত দেন না”।অতএব বিধর্মীদের উৎসবে যোগ দেয়া,তাদের সমর্থন জানানো কিংবা সহায়তা করা মানে নিজদের দ্বীনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।
আমরা মুসলমানরা অনেকেই ”থার্টি ফাস্ট নাইট” তথা নববর্ষের উৎপত্তি জানিনা।খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে জুলিয়াস সিজার সর্বপ্রথম ইংরেজি নববর্ষের প্রচলন ঘটায়।মেসোপটেমিয়ায় এই নববর্ষ শুরু হতো নতুন চাঁদের সঙ্গে।ব্যবিলনিয়ায় শুরু হতো ২০শে মার্চ মহাবিষুবের দিনে।আ্যাসিরিয়ায় শুরু হতো ২১শে সেপ্টেম্বর।গ্রীকদের নববর্ষ শুরু হতো ১ই মার্চ।তবে পহেলা জানুয়ারি নববর্ষের দিন নির্ধারিত হয় ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর।ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়,কোনো কালেই মুসলমানদের সাথে নববর্ষ উদযাপনের কোনো নজীর নেই।
কাফের,মুশরিক,ইহুদী,খ্রীষ্টানদে
সুতরাং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয় এমন কোন উৎসব মুসলিমদের পালন করা যাবে না।কারণ বিধর্মীয় উৎসব অনুসরণ মুসলিমদের জন্য হারাম।নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের সাথে সামঞ্জস্য রাখলো সে তাদের অন্তর্ভুক্ত”।(আবু দাউদ:৩৫১৪)
ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন,”আল্লাহর কিতাব,রাসূলের সুন্নাহ,খোলাফায়ে রাশেদার আদর্শ ও সকল আলেম একমত যে,মুশরিকদের শিরকি কাজের বিরোধীতা করতে হবে এবং তাদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করা যাবেনা”।
হাদিসে উল্লেখিত,হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,একদিন হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলেন,ইয়া রাসূল (স.)!আমরা ইয়াহুদীদের থেকে থাদের কিছু ধর্মীয় কথা শুনে থাকি,যাতে আমরা আশ্চর্যবোধ করি,এর কিছু আমরা লিখে রাখবো কি?রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,তোমরাও কি দ্বিধাদ্বন্দে রয়েছো?যে রকম ইয়াহুদি নাসারাগণ দ্বিধাদ্বন্দে রয়েছে।অবশ্যই আমি তোমাদের নিকট পরিপূর্ণ,উজ্জ্বল ও পরিষ্কার ধর্ম নিয়ে এসেছি।নবী মূসা (আ.) যদি দুনিয়ায় থাকতেন,তাহলে তাকেও আমার অনুসরণ করতে হতো।মুসনাদে আহমদ,বাইহাকি,মিশকাত।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় হিজরত করেন,তখন মদিনা বাসীদের দু’টি আনন্দের দিন ছিলো,যেখানে তারা খেলা-ধুলা ও আনন্দ উপভোগ করতো।রাসূল বললেন,এই দু’টি দিন কি?তারা বললেন,আমরা আনন্দ ও খেলাধুলা করতাম।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,”নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তার পরিবর্তে তার চেয়ে উত্তম দু’টি দিন দিয়েছেন:ইদুল ফিতর ও ইদুল আদহা”।(আবু দাউদ ও আহমাদ)।উক্ত হাদিস প্রমাণ করে কাফেরদের উৎসব পালন করা হারাম।কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের জাহেলি উৎসবের উপর বহাল রাখেন নি।তাই মুসলমানদেরকে সূরা কাফিরুনের আয়াতের উপর অটল থাকতে হবে।আয়াতের সারাংশ এমন,”বলুন!তোমাদের দ্বীন তোমাদের জন্য আমার দ্বীন আমার জন্য”।
আজ নববর্ষ উৎসবের নামে অশ্লীলতার প্রসার হচ্ছে।বেহায়াপনার সর্বনিম্ন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে।বেহায়াপনা ও অপরাধ এক সূত্রে গাথা।ক্ষেত্র বিশেষ স্বাভাবিক অপরাধ থেকে বেহায়াপনা তথা অশ্লীলতা বেশি ক্ষতিকর।কারণ একবার যুবক-যুবতী অশ্লীলতায় লিপ্ত হলে তা থেকে বেরুতে পারেনা।ফলে বার বার একই অপরাধে নিপতিত হতে থাকে।কাজেই প্রতিটি মুসলিম পরিবারে নিজে,পরিজন ও সন্তানদেরকে অশ্লীলতা থেকে রক্ষা করা জরুরী।আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা বলেন,”তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা করো এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে রক্ষা কর।যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর,যার উপর নিয়োজিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফেরেশতাগণ,তারা আল্লাহ যা নির্দেশ দেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হন না।আর তাদের যা নির্দেশ দেয়া হয় তাই তামিল হয়”।(সূরা আত-তাহরীম ৬৬:০৬)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “তিন ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম।তারা হলেন,মাদকাসক্ত,পিতামাতার অবাধ্য ও দাইউস,যে তার পরিবারে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়।মুসনাদে আহমদ-৬৯।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,”তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং প্রত্যেককেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিঙ্গাসা করা হবে,রাষ্ট্র নেতাকে তার প্রজাদের সম্পর্কে,পুরুষ লোককে তার পরিবারের ব্যাপারে,মহিলাকে তার স্বামীর সার্বিক ব্যাপারে,একজন পরিচালক তার মালিকের সম্পদের রক্ষক,আর তাকে সেটার ব্যাপারে জিঙ্গাসা করা হবে।বুখারি-৮৯৩ ও মুসলিম-১৮২৯।
মুসলমান নিজ ও নিজের পরিবারের পাশাপাশি নিজের আওতার মধ্যের সকলকে এবং রাষ্ট্র প্রধান কর্তৃক প্রজাদেরকে অশ্লীলতার থেকে বিরত রাখতে হবে।কেননা ইহা মুসলমানদের মৌলিক দায়িত্বের অন্যতম।অশ্লীলতার প্রসারের ব্যাপারে আল্লাহ ভয়ংকর শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন।তিনি বলেন,”যারা চায় যে,মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রচার-প্রসার ঘটুক তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।আর আল্লাহ জানেন,তোমরা জান না”।(সূরা নুর-আয়াত ১৯)
সুতরাং প্রত্যেক মুসলিমের উচিত ইহুদী,খ্রিষ্টান,হিন্দুসহ সকল বিধর্মীদের প্রচলিত নির্ধারিত রীতিনীতি গুলো পরিহার করতঃ ইসলামী রীতি নীতি প্রচার ও প্রসার ঘটানো।মহান প্রভু আমাদেরকে তথাকথিত থার্টি ফাস্ট নাইট তথা নববর্ষ নামক ইমান বিধ্বংসী ব্যাপার পরিহার করার তাওফিক দিক। আমিন।
লেখক,
মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত ত্বোহা
শিক্ষার্থী,আল-ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগ।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
চুল ও দাড়ি কে'টে ভারতে পালালেন কুমিল্লার স্যাডো বাহার
এমপি বাহার ও তার মেয়ে সূচির গন.. বিস্তারিত
কুমিল্লায় বিনা খরচে বাইক চালানোর প্রশিক্ষণ পেল শতাধিক তরুণ-তরুণী
শরীফ খানঃ কুমিল্লা নগরীতে রানা.. বিস্তারিত
দাউদকান্দির দশপাড়ায় খন্দকার মোশতাকের ভাতিজা ও নাতনির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ
খন্দকার মোস্তাকের দুই বংশধর খন.. বিস্তারিত
জাবিতে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের গুলি, সাংবাদিকসহ আহত শতাধিক
এএসপি আব্দুল্লাহিল কাফি মাইকে.. বিস্তারিত
শিক্ষার্থী হত্যা মামলার আসামীকে চাকরি দিচ্ছে কুবি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি.. বিস্তারিত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় সংস্কার হবে সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়া -কায়কোবাদ
আমি অন্যায় করলে আমার বিরুদ্ধে.. বিস্তারিত
৮ বছর পর প্রকৃত নামে ফিরলো ভিক্টোরিয়া কলেজ অডিটোরিয়াম
আওয়ামী লীগ সরকার ভিন্ন মাধ্যম.. বিস্তারিত
তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিজনেস ডাইজেস্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন এক্সপার্ট আইটি পার্ক
তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিজনেস ডাই.. বিস্তারিত
নামের কারণে বিভাগ না দিয়ে কুমিল্লাবাসীর প্রতি জুলুম করা হয়েছে - ডা.শফিকুর রহমান
কর্মী সমাবেশ জনসমাবেশে রূপ নেয়.. বিস্তারিত
কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তরিকুলকে কুবিতে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা
আওয়ামী আমলের একজন কাউন্সিলরের.. বিস্তারিত