শিরোনাম

প্রকাশঃ Fri, Aug 19, 2022 10:13 PM
আপডেটঃ Fri, Apr 19, 2024 7:32 AM


কুমিল্লা শহরে বেড়েছে ছিনতাই এবং কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ম

কুমিল্লা শহরে বেড়েছে ছিনতাই এবং কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ম

ফাহিম মুনতাছিমঃ

কুমিল্লা নগরীতে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে কিশোরগ্যাং এবং ছিনতাই এর মতো ব্যাধি।নগরীর প্রত্যেক অলিগলিতে গড়ে উঠছে কথিত বড় ভাইদের শেল্টারে কিশোরগ্যাং।

 

আজ শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে কুমিল্লা নগর উদ্যানের পাশে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে শাহাদত (১৫) নামে এক যুবক নিহত। সে নগরীর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ এলাকার বশু মিয়ার বাড়ির মো. শাহ আলম ভূঁইয়ার ছেলে। 


জানা যায়, সে নগর উদ্যানের স্কাই ড্রাইভ রাইডের স্টাফ ছিলো। একমাস আগে সে চাকরি ছেড়ে চলে যায়। আজ বিকালে চারজন বন্ধু সহকারে ধর্মসাগর পাড়ে আসলে স্থানীয় মফিজাবাদ কলোনির হাসিব ও রতন নামের দুই ছেলে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। কাস্টমস অফিসের সামনে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে কয়েকবার ছুরিকাঘাত করে। দুজন মিলে প্রকাশ্যে সবার সামনে তাকে দা ও ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যায়। এতে এক পর্যায়ে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।




 রতন এবং হাসিব এদের মধ্যে হাসিবকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।


নগরীর বেশ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, ধর্মসাগর পাড় এলাকায় কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ম্য সবচেয়ে বেশি। দিনভর উঠতি বয়সের কিশোর-তরুণরা এখানে ইভটিজিং, মাদক, ছিনতাই এরমত নানা অপকর্মে জড়িত থাকে। তাদের উৎপাতে এই এলাকায় চলাচলকরা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব গ্যাং এর সদস্যরা প্রায়শই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।



এছাড়াও কুমিল্লা শহরের সালাউদ্দিন হোটেল থেকে একটু সামনে অভয় আশ্রম,চর্থা,হাউজিং, নিউ মার্কেট  , সাত্তার খান শপিংমল থেকে খন্দকার শপিং মল পর্যন্ত মোবাইল চোর, এবং ছিনতাই কারীদের  বিচরন ভুমি বলা যায়।এই জায়গা গুলি, এরা প্রতি দলে ৮ থেকে১০ জন থাকে।তারা কোন মহিলা একা  বা তার ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে এই জায়গা গুলি দিয়ে যাওয়ার সময় ঐ ছিনতাইকারীরা মহিলার আগে পিছে পাশে গা ঘেষে হাটতে থাকে এই সময় সামনের একজন চোর হঠাৎ দাড়িয়ে যায় সামনে থাকা নিজ দলের চোরের সাথে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ধাক্কাখায় পেছনের মহিলা এবং তার সাথে বাচ্ছা বা পুরুষ ও  হঠাৎ থমকে দাড়িয়ে যায়, তাদের মনোযোগ থাকে সামনের লোকটির উপর যে হঠাৎ ধাক্কাখেয়ে দাড়িয়ে গেছে,এই সুযোগে মহিলার কাধে ঝুলানো ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে মোবাইল বা টাকা চোখের পলকে পেছনে থাকা ছিনতাইকারীটা চেইনখুলে  নিয়ে যায়, যা আশে পাশে কেউ দেখতে পায়না,কারন আশে পাশে যারাই থাকে তারা মোবাইল চোরের সদস্যরা।



এ ছাড়াও  ছোট ছোট টোকাইরা ২ বা ৩ জন মহিলাদের  এই সব উল্লেখিত জায়গায়  হাতে পায়ে ধরে পয়সার জন্য টানা টানি করে  বিব্রত করে  সব মনোযোগ তখন থাকে কি করে টোকাইদের থেকে  রক্ষা পাওয়া এই সুযোগে মোবাইল চোরারা তাদের অপারেশন চালায়।


মুলত  মোবাইল চোররা টার্গেট করে ঐ সব মহিলা বা মহিলাদের যারা মার্কেটে কেনা কাটা করে টাকা মোবাইল ব্যাগে রাখে তখন মোবাইল চোরেরা টার্গেটে থাকে।

তাছাড়া  রিকশা গাড়ির ভীড়ে  ফুটপাত থেকে এটা সেটা কিনতে গিয়ে মহিলারা মনোযোগ হারিয়ে ফেলে নিজের ব্যাগের প্রতি ঐ সুযোগে মোবাইল চোরেরা তাদের অপারেশন চালায়।



এছাড়াও কান্দিরপাড় থেকে যারা অটো কিংবা সিএনজিতে চলাচল করে সেসব গাড়িতেও ছিনতাইকারীর সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।।পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ছিনতাই কারী দলের দুইজন সদস্য অটো বা সিএনজিতে যাত্রী সেজে বসে থাকে পরবর্তীতে কয়েকজন যাত্রী হয়ে গেলে গাড়ি ছেড়ে দেয় এবং একটু সামনে আগানোর পর ছিনতাইকারীদের সাথে থাকা সুইচ গিয়ার বা ধারালো কিছু দিয়ে যাত্রীদের ভয় দেখিয়ে সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়,মাঝেমধ্যে গাড়ির চালকরাও জড়িত থাকে ছিনতাই এর সাথে।



ছিনতাইকারীর কবলে পতিত নগরীর বাসিন্দা ইলিয়াস আহমেদ বলেন - টাওয়ার এ গিয়েছিলাম মাকে ডাক্তার দেখাতে ফিরে আসার সময় একটি অটোরিক্সায় উঠি,কিছুদূর আসার পর হঠাৎ অভয় আশ্রম এর সামনে গাড়িটি থামিয়ে ফেলে, সাথে সাথে দুইজন ছিনতাইকারী ছুরি দেখিয়ে মোবাইল,টাকা এবং যা ছিলো সব নিয়ে গেছে।আমার পাশের যাত্রীর কাছে কম টাকা পাওয়ায় তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে ছিনতাইকারীরা।


এভাবে ছিনতাই চলতে থাকলে ঘর থেকে বের হওয়া দায় হয়ে পড়বে বলছে সাধারণ মানুষ।



বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর  বলেন - আমাদের নিয়মিত টহল চলছে,তারপরও আমরা টহল আরো জোরদার করবো, যেসব স্পটে ছিনতাই এর পরিমান তুলনামূলক বেশি, সেসব স্থানে টহল আরো জোরদার করা হবে। 


ছিনতাই নিয়ে জনজীবন সঙ্কিত হয়ে আছে,জনগনের শেষ ভরসা এখন প্রশাসন এর উপর।




www.a2sys.co

আরো পড়ুন