ছাবিকুন্নাহার নুর, ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর (দৈনিক লোকালয়): দীর্ঘদিন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিলেও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রকাশ্যে আসেনি। তবে গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য। বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে পরিচিত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী নিয়মিত অর্থায়ন করতেন ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বাধীন নবগঠিত রাজনৈতিক দল ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’-কে। ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, জনতা পার্টির আত্মপ্রকাশ থেকে শুরু করে পরিচালনার জন্য অধিকাংশ অর্থ জোগাতেন এনায়েত করিম। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগেরও প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্ত কর্মকর্তা আক্তার মোর্শেদ বলেন, এনায়েত প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা দিতেন এই দলে। বাকি অর্থ জোগাড় করতেন ইলিয়াস কাঞ্চন। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, সরকার পরিবর্তনের মিশন নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন এনায়েত করিম। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেল ও গুলশানের ফ্ল্যাটে অবস্থানকালে তিনি প্রভাবশালী নেতা, ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরই অংশ হিসেবে ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলে তাকে দিয়ে নতুন দল গঠনের উদ্যোগ নেন। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে জনতা পার্টি বাংলাদেশ। তবে অভিযোগের বিষয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের সরাসরি বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তদন্তে আরও বেরিয়ে এসেছে, এনায়েত করিমের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল দুইজন ডিআইজি ও এক প্রভাবশালী আমলার সঙ্গে। ওই আমলার নামে দুদকের একাধিক মামলা থাকলেও মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিনিময়ে দেড়শ কোটি টাকার চুক্তির তথ্য মিলেছে। এনায়েতের সহযোগী মোস্তফা আজাদকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি পূর্বে একাত্তর টিভিতে কর্মরত ছিলেন এবং পরে এনায়েতের সহকারী হিসেবে মাসিক দুই লাখ টাকা বেতনে কাজ করতেন। গুলশানে এনায়েতের ভাড়া বাসার দেখভালও তিনিই করতেন। মন্ত্রীপাড়ায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির সময় গ্রেফতার হওয়া এনায়েত করিমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক করা হয়েছে। আদালত তার বিরুদ্ধে ৪৮ ঘণ্টার রিমান্ড শেষে আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, এনায়েত পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে কাজ করার কথা স্বীকার করেছেন। গোয়েন্দারা বলছেন, বিদেশি এজেন্টরা দেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে এবং এনায়েত করিম সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই কাজ করছিলেন।