ভারতের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রাধা দত্ত
বলেছেন, ভারত সরকার পূর্বের চেয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নতুনভাবে ভাবাচিন্তা
করছে এবং তা থেকেই নেত্রী শেখ হাসিনাকে আগের মত রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত
রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তার ধারণা। রাধা দত্ত বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে এই রূপে একটি
বার্তা পাঠানো হয়েছে যে তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য প্রদান করলে তা
সহ্য করা হবে না; তার এই বিশ্লেষণে যে ধারাবাহিকতা দেখছেন তাতে প্রতিবেশী দেশটির অবস্থান
আগেকার মতো নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ভারতের জন্য নিরাপত্তার হুমকি না
হবে—এমন নিশ্চয়তা বাংলাদেশ সরকারকে দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা নানা সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও অভ্যুত্থান বিষয়ক বিবৃতি দিয়েছেন যা নিয়ে
কিছু বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করা হিসেবে মন্তব্য করেছেন;
ড. ইউনুস ও কয়েকজন রাজনীতিকও এ জাতীয় কর্মকাণ্ডকে উদ্বেগজনক বলে দেখেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে বক্তব্য থেকেই বিরত রাখতে একাধিকবার অনুরোধ জানানোর
কথা থাকলেও, ওই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপের
খবর পাওয়া যায়নি—তবে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেখ হাসিনার উপস্থিতি
মোটেই আগের মতো লক্ষ্যণীয় নয় বলে পর্যবেক্ষকরা বলছেন।
সাবেক রাষ্ট্রদূত আব্দুল হাই মনে করেন, ভারতের এই পরিবর্তনশীল
কূটনৈতিক আচরণ তাদের আগের অবস্থান থেকে সরে আসার ইঙ্গিত বহন করে; তিনি আরও বলেন, শেখ
হাসিনাকে ফেরত দেয়া কিংবা কিভাবে ফিরিয়ে আনা হবে—এটি মূলত নির্ভর করবে ভবিষ্যতের
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ওপর। এই বিশ্লেষক ও কূটনৈতিক পর্যবেক্ষণের
মধ্যেই অঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিবেশ, দ্বিপক্ষীয় কূটনীতি ও নিরাপত্তা বিবেচনা প্রধান ভূমিকা
রাখছে বলে বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন।