"শেখ হাসিনা-তিতাস ওয়াই সেতু'র কোটি কোটি টাকার জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে কয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে মো. আহসান উল্লাহ নামের বাজারের এক ব্যবসায়ি হোমনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও রহস্য জনক কারনে তা বন্ধ হচ্ছে না। অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, কয়েকজন ব্যক্তি ব্রীজের নীচের এলজিইডি কর্তৃক অধিগ্রহন করা জায়গায় দোকান ঘর তুলে দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে বাধা দিতে গেলে উল্টো হুমকি দমকি ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখায়। এতে বহু দিনের পুরানো বাজারের দোকান ও গরু বাজার বন্ধ হয়ে গেছে।এমন কি মানুষের চলাচলের রাস্তাও বন্ধ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, ব্রীজের নীচের অধিগ্রহন করা ব্রীজের জমি দখল করে দোকান ঘর নির্মান করছে কয়েক জন ব্যক্তি। বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান ভূমি অফিস থেকে বাধা দেওয়া হলেও বাধা অমান্য করে জোর করে তারা দোকান ঘর নির্মান করছেন।
এ বিষয়ে অভিযোগ কারি আহসান উল্লাহ জানান,রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. শাহ আলম অধিগ্রহনকৃত জায়গায় জোর করে দখল করে দোকান ঘর নির্মান করছে এতে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ হাঁস মুরগী ও গরুবাজার ও রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আমি বাদী হয়ে ইউএনও স্যার বরাবর অভিযোগ করেছি। অফিস থেকে বাধা দেয়া হলেও সেই বাধা অমান্য করে মো. শাহ আলম গং জোর করে দোকান ঘর নির্মান অব্যহত রেখেছে।
জানাগেছে,শতকোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত দেশের একমাত্র ওয়াই আকৃতির 'শেখ হাসিনা-তিতাস সেতু'টি ২০১৮ সালের ১৬সেপ্টেম্বর প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। নির্মাণের কয়েক বছরের মাথায় একদল ভূমিখেকো ব্রীজের জায়গা দখল করে নিচ্ছে। এতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত দর্শনার্থীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। স্থানীয়দের জোর দাবি ভূমিখেকোদের হাত থেকে সেতুর নীচের দখলকৃত জমি উদ্ধার করে অবিলম্বে ব্রীজের নীচের বাজার ও সৌন্দর্য্য ফিরিয়ে দেওয়া হউক।
রামকৃষ্ণপুর বাজারের ইজারাদার সফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, সেতুটি নির্মাণের পরে বাঞ্ছারামপুর, হোমনা ও মুরাদনগরে যাতায়াতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়টিকে পূঁজি করে ব্রীজের জায়গা দখলের পাঁয়তারা করছে রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. শাহ আলম। আমি ইজারা নিয়েও গরুবাজার বসাতে জায়গা পাচ্ছি না সে দখল করে দোকান ঘর নির্মান করছে। এতে আমি আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এ অবৈধ দখল বন্ধ না হলে সেতুর দুই পাশের আরো জায়গা বেদখল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উক্ত ঘটনায় অভিযুক্ত মো. শাহ আলম জানান, শুধু আমি না অনেকেই দোকান ঘর নির্মান করে দখল করছে। তাদের দেখে আমিও দোকান ঘর তুলছি, সরকারের প্রয়োজন হলে জায়গা ছেড়ে দিব।
এ বিষয়ে চান্দের চরের ইউনিয়নের সহকারি ভুমি কর্মকর্তা (নায়েব) মো.আমান উল্লাহ জানান, এসিল্যান্ড স্যারের নির্দেশে তাকে মানা করা হয়েছে।কিন্ত সে বাধা অমান্য করে দোকান ঘর নির্মান করছে।
হোমনা উপজেলা প্রকৌশলী এলজিইডি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, শুনেছি এজিইডি বিভাগ কর্তৃক ব্রীজের জায়গা অধিগ্রহন করা হয়েছে। জমির মূল্যওপরিশোধ করা হয়েছে। উক্ত জমি দখল করতে দেয়া হবে না।
এসিল্যান্ড মো. ইউসুফ হাসান জানান অভিযোগ পেয়েছি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের মাধ্যমে নিষেধ করা হয়েছে। সমস্ত স্থাপনার তালিকা করে তা উচ্ছেদ করা হবে।
ইউএনও ক্ষেমালিকা চাকমা জানান,অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এসিল্যান্ডকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জমিটি এজিইডি বিভাগের হওয়ায় সরাসরি ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হচ্ছে। দখল বন্ধ না হলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি মো. সিরাজুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, ওয়াই ব্রীজের নীচের বাঞ্ছারামপুর অংশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। হোমনা অংশে অবৈধ দখলদার থাকলে তা দ্রুত অপসারন করার জন্য হোমনা উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করবো।