কুমিল্লার মুরাদনগরে বসত ঘরের দরজা ভেঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ফজর আলী নামের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ফজর আলী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত এবং স্থানীয় ১১নং দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া খোকনের বডিগার্ড। 

অথচ আওয়ামী লীগের সাবেক অবৈধ এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের মিডিয়া উইং আরিফের পরিচালিত মুরাদনগর লাইভ টিভিতে আওয়ামী লীগ নেতাকে বিএনপি নেতা বলে প্রচার করা হয়। 

আওয়ামী ফ্যাসিবাদের নিয়ন্ত্রিত ফেসবুক পেইজ মুরাদনগর লাইভ টিভিতে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মহিউদ্দিন অন্জন ও সদস্য সচিব মোল্লা মজিবুল হক। 

নেতৃবৃন্দ যৌথ বিবৃতিতে বলেন, মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি বরাবরই কথিত মিডিয়ার ট্রায়ালের স্বীকার। আওয়ামী লীগের সাবেক ভোটচোর এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের মিডিয়া উইং আরিফ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের প্ররোচনায় এখনো বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে যাচ্ছে।  

গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দিবাগত রাতে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামে বসত ঘরের দরজা ভেঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা ফজর আলীর বিরুদ্ধে। অথচ কথিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ও নব্য ফাসিষ্ট আসিফ মাহমুদ সমর্থকরা  (৩৮) বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের পুর্বপাড়ার শহীদ মিয়ার ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা ফজর আলীকে বিএনপি নেতা বলে অপপ্রচার করছে।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূইয়াও আওয়ামী লীগের সাংবাদিক ও তাদের নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন পেইজ থেকে একের পর এক মিথ্যাচার করছে। 

উল্লেখ্য যে, ২৬ জুন দিবাগত রাতে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামে বসত ঘরের দরজা ভেঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে (২৫) ধর্ষণে অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা ফজর আলীর বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় অভিযুক্ত ফজর আলীকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা করেছে। 

অভিযোগে ওই নারী জানান, গত ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে তার বাবার বাড়ি বেড়াতে আসে। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে অভিযুক্ত ফজর আলী ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে বাহিরে দাঁড়িয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলে। ভুক্তভোগী ওই নারী ঘরের দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে, একপর্যায়ে ফজর আলী ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। পরে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। 

ভুক্তভোগীর চাচি শ্বরসতী বর্মন বলেন, আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি পুজো চলছিল পাশের বাড়িতে। আমি ঘর থেকে সেখানে যাব এমন সময়, পাশের বাড়িতে অনেক শব্দ হচ্ছিল। আমি ভয়ে সেখান থেকে দৌড়ে গিয়ে পূজোর অনুষ্ঠান থেকে লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। লোকজন উপস্থিত হয়ে দরজা খুলতে গিয়ে দেখে দরজা ভাঙ্গা। পরে সকলের সহযোগিতায় আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি। 

স্থানীয় বাসিন্দা সজীব বলেন, গতকাল রাতে হিন্দু বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান ছিল আমরা সেই অনুষ্ঠান দেখছিলাম। পরে রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে। আমাদেরকে ওই ভুক্তভোগীর চাচী গিয়ে জানায় তার পাশের বাড়িতে কি যেন হচ্ছে। তখন আমরা উপস্থিত সবাই সেখানে গিয়ে দরজা খুলতে গিয়ে দেখি দরজা ভাঙ্গা। ঘরে প্রবেশ করে দেখি জোরপূর্বক ফজর আলী ধর্ষণ করছে। পরে আমরা সেখান থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি। অভিযুক্ত ফজর আলী ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ও জাহাঙ্গীর আলম সরকার উভয়ের সময়েই আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী নেতা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকনের বডিগার্ড। 

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান ধর্ষণের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে। অভিযুক্ত আসামিকে ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তকে আটক করা হবে।