ছাবিকুন্নাহার নুর,
ঢাকা, ৩আশ্বিন (১৮ সেপ্টেম্বর): শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের বাজারে দেখা মিললো বাংলাদেশের রূপালি ইলিশের। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে হাওড়ার পাইকারি বাজারে ইলিশের বাক্স খুলতেই ভিড় করেন স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ীরা।
প্রথম ধাপে বাংলাদেশ থেকে ছয়টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩৭ টন ৪৬০ কেজি ইলিশ রপ্তানি করেছে। যদিও বাজারে মোট ইলিশ এসেছে প্রায় ৫০ টন। আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ধাপে ধাপে আসবে মোট ১২০০ টন পদ্মার ইলিশ।
তবে প্রথম দিনের বেচাকেনা আশানুরূপ হয়নি। পাইকারি বাজারে ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১,৬০০ থেকে ১,৮০০ রুপি দরে। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দাম উঠেছে ২,০০০ রুপি, যা খুচরা বাজারে ২,০০০-২,৫০০ রুপি পর্যন্ত গিয়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রথম দিন দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের আগ্রহ কম। তবে পূজার সময় যত ঘনিয়ে আসবে, তত চাহিদা ও বিক্রি বাড়বে বলে তারা আশাবাদী।
ব্যবসায়ীদের মতামত: মনোজ কুমার সাউ, উত্তর ২৪ পরগনার খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, "এত বেশি দাম হবে ভাবিনি। কেজি ২৫০০ রুপিতে বিক্রি করতে গেলে মধ্যবিত্ত মানুষ কিনবে না।"
সুব্রত মাঝি, দমদমের ব্যবসায়ী বলেন, "আগে ৭-৮ পেটি কিনতাম, এবার বাজার বুঝে মাত্র ১ পেটি নিয়েছি।"
এদিকে ভারতের ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, বাংলাদেশের ইলিশ এবার তুলনামূলক কম হওয়ায় দাম বেশি। তবে বাংলাদেশ সরকার পূজার আগে ইলিশ পাঠিয়ে বাঙালিদের প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়েছে বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ।
তিনি বলেন, “গুজরাট থেকে ইতোমধ্যে সাড়ে চার হাজার টন ইলিশ এসেছে, যার দাম ১০০০-১২০০ রুপির মধ্যে ছিল। তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের ইলিশের দাম বেশি হলেও, পূজার সময়ে বিক্রি হবেই।”
বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মঙ্গলবার রাতে বেনাপোল হয়ে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে পৌঁছায়। তবে বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে ছুটি থাকায় একদিন দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাকগুলো। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে হাওড়ায় পৌঁছায় রূপালি মাছ।
এদিকে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়া, অর্থাৎ দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক সূচনা। এরপর একে একে বিজয়া দশমী, লক্ষ্মীপূজা, কালীপূজাসহ বিভিন্ন উৎসবে ইলিশের চাহিদা থাকবে তুঙ্গে। সেই সময়ের আগেই বাজার স্বাভাবিক হবে এবং সাধারণ মানুষও রূপালি স্বাদ নিতে পারবে বলে আশাবাদী সব পক্ষ।