ভারত সফরে গিয়ে আবারও নারী ইস্যুতে কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়লেন আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি।
নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নারী সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার পর রোববারের আরেক সম্মেলনে পরিস্থিতি একেবারে উল্টে যায়—এইবার নারী সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন এবং সরাসরি আফগান নারীদের অধিকার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মেয়েদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুত্তাকি বলেন, “নারীদের শিক্ষা ইসলামি শরিয়তে হারাম নয়। তবে দেশের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত মেয়েদের উচ্চশিক্ষা স্থগিত থাকবে।”
তিনি দাবি করেন, বর্তমানে আফগানিস্তানে এক কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে, যার মধ্যে ২৮ লাখ নারী ও কন্যা শিক্ষার্থী রয়েছে। তার ভাষায়, “কিছু এলাকায় সীমাবদ্ধতা আছে, তবে এর মানে এই নয় যে আমরা শিক্ষার বিরোধী।” তবে সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্নের সুযোগ না দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করা হয়।
২০২১ সালে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও জনজীবনে অংশগ্রহণের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। মেয়েদের স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, পার্ক, জিম, এমনকি বিউটি সেলুনেও যাওয়া নিষিদ্ধ।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, আফগান নারীরা আজ ‘শ্বাসরুদ্ধকর’ জীবনে বন্দি। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে প্রতিবাদরত ছাত্রীদের ওপর তালেবান বাহিনী হামলা চালিয়েছে।
শুক্রবারের বিতর্কিত ঘটনার ব্যাখ্যায় মুত্তাকি বলেন, “দিল্লিতে নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়া হয়েছিল একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে। সাংবাদিকদের তালিকা খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছিল।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পথে তালেবানের সবচেয়ে বড় বাধা তাদের কঠোর শরিয়া-ভিত্তিক নীতি, যা নারীদের শিক্ষা ও স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণভাবে রুদ্ধ করে দিয়েছে।
আকাশ টিভি/ন