কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতিনিধি
খালিদ বিন ইমরান,কুমিল্লা, 
২ নভেম্বর, ২০২৫:
কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের মুখে ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ইনস্ট্রাক্টর (১ম শিফট) মো. মিজানুর রহমান-কে সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তীব্র শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মুখে তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছেন।
ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের ২য় সেমিস্টারের ১ম শিফটের ‘বেসিক ইলেক্ট্রিসিটি’ ক্লাস চলাকালে এই ঘটনা ঘটে। শ্রেণিকক্ষে এক শিক্ষার্থী শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান-কে ক্যাম্পাসের মসজিদে নামাজ না পড়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে, শিক্ষক ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো মন্তব্য করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের ভাষ্য অনুযায়ী, শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান শিক্ষার্থীদের বলেন, "তোমরা যে মসজিদে নামাজ পড়ছ, তোমরা তো ইট বালুকে সিজদাহ্ দিচ্ছ।" তিনি আরও বলেন, "যে কাবাঘরে গিয়ে তোমরা হজ করো, ওইটা তো আদমের ঘর।" এছাড়াও, তিনি একজন সাহাবী (রা)-এর একটি হাদিসকে ‘ভুয়া’ প্রমাণের চেষ্টা করেন এবং কুরবানি সম্পর্কে কটূক্তি করে বলেন, "আমরা কুরবানি করি সেটা নাকি আমরা আমাদের স্বার্থের উদ্দেশ্যে করি।"
শিক্ষকের এমন মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে ধর্মপ্রাণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ক্লাস রুম থেকে শিক্ষককে অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে যান। ধর্ম অবমাননাকারীর বিরুদ্ধে ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ না আসা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান। এসময় তারা কঠোর ভাষায় বলেন, "কেউ যদি ধর্মের অবমাননা করে, কটূক্তি করে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না" এবং "কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মধ্যে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি ঠাঁই নেই।"
শিক্ষার্থীদের কঠোর অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মো. মিজানুর রহমান (ইনস্ট্রাক্টর, ইলেকট্রনিক্স ১ম শিফট)-কে কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সকল কার্যক্রম থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একইসাথে তিনি শিক্ষার্থীদের সামনে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাঁকে অন্যত্র বদলি (ট্রান্সফার) করার আগে পর্যন্ত তিনি একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।
এই ঘটনায় ধর্মপ্রাণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের সময়োপযোগী পদক্ষেপে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এই বিষয়ে আর কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটাতে এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।