শিরোনাম

প্রকাশঃ Fri, Aug 18, 2023 9:59 PM
আপডেটঃ Mon, Apr 29, 2024 5:01 AM


আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর কবরের পাশে পুলিশের কান্না

আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর কবরের পাশে পুলিশের কান্না

পিরোজপুরের মসজিদে এনামুল হকের এক রাতঃ


আমি কখনো কখনো নিজেই নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারিনা, মনের  অজান্তে অতিক্রম করি শত কিঃ মিঃ পথ মারিয়ে। তেমনি গতকাল ও এর ব্যতিক্রম হয়নি, আল্লামা সাঈদীর ইন্তেকাল এর কথা শুনে থাকতে পারিনি, চলে এসেছিলাম পিরোজপুর। এসে জানাজায় শরীক হয়েছিলাম ঐটা কততম জানাজা এটা বলতে পারবনা, কারণ গতকাল গোটা পিরোজপুর শহর জানাজার শহরে পরিনত ছিল। হুজুরের কবর জিয়ারত রাতের ট্রেন ফেল এটা বলা যায় স্বেচ্ছায়, শেষে থাকলাম হযরতের প্রতিষ্ঠিত মসজিদে, যে মসজিদের দক্ষিণ দেয়াল ঘেঁষেই তার কবর দেয়া হলো। 


রাতে মসজিদে শতাধিক মানুষ সারারাত নামাজ কোরআন তেলাওয়াত এর মাধ্যমে কাটিয়ে দিল, এর মাঝে কিছু কর্কশ ভাষী পুলিশের আগমন,এসে এক মুরুব্বীকে ধমক কেন সে এত রাতে কবরের পাশে দুহাত তুলে কাঁদছে,? তার বাড়ী সম্ভবত বললেন কুমিল্লায়। যাহোক আবার কিছুক্ষণ পর দেখলাম আমাদের সবাইকে মসজিদ থেকে রাত ১২ টার পর বের না হওয়ার জন্য উচ্চ বাচ্য করে দরজাটা লাগিয়ে দিতে বললেন মুয়াজ্জিনকে। কাঁচের জানালা মসজিদের ২য় তলা থেকে নজর রাখলাম কারণ কিছুটা ভয় কাজ করছিল।

কিন্তু পরের ক্ষনেই দেখলাম যে দৃশ্য সেটা ভিন্নতর, উচ্চ বাচ্য করা পুলিশটি তার সাথে আসা ১৫/২০ জন পুলিশ সহ এই কবরটির পাশে দাঁড়িয়ে দুহাত তুলে প্রায় ১০/ ১৫ মিঃ ধরে কাঁদলেন যার গোঁ গোঁ শব্দ মসজিদের জানালা দিয়ে সশব্দে শুনতে পেলাম। তারা চলে গেলেন বলে গেলেন কেউ বের হবেন না রাতে মসজিদ থেকে।

চোখে ঘুম নাই, এরই মাঝে ঘড়ির কাঁটা ২ টা ছুঁই ছুঁই পুলিশের গাড়ীর সাইরেন আবার তাও আবার ৩ টা গাড়ী এসে দাঁড়াল মসজিদের সামনে ফাঁকা ঈদগাহ ময়দানে। মোটামুটি যারা ছিলাম পাশাপাশি সবাই আতঙ্কিত হয়ে চুপসে গেলাম। কারণ পূর্বে পুলিশ বলে গিয়েছিল লাইট বন্ধ রাখতে মসজিদের, কিন্তু কোরআন তেলাওয়াত করতে গিয়ে দুজন লাইট জালিয়েছিল। লাইট বন্ধ করে ঘুমের ভান করে শুয়ে আছি কেউ মাথা উঁচু করে তাকিয়ে আছি আমি তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু গাড়ী থেকে পুলিশ সবাই নামলেন চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলেন কজন অজু করলেন বুঝা গেলো মসজিদের অজুখানায়, তারপরের দৃশ্য যেটা সেটা বর্ণনাতীত। তারা সবাই জিয়ারত করলেন মুনাজাত করলেন হাতে সামান্য করে মাটি নিয়ে কবরে নিক্ষেপ করে করে চলে গেলেন নিঃশব্দে। 


ফজরের আজান হতেই কত মানুষ ছুটে আসলো আসতেছে মসজিদে। ফজরের ফরজ নামাজ শেষ করে, অশ্রুসজল নয়নে বাড়ীর দিকে রওনা দিলাম আমার সাথে থাকা সঙ্গী শফিক সহ, তার আগেই আবার ও জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সালাম জানিয়ে।



"আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর"

--গভীর রাত তবু মানুষের শ্রদ্ধা ভালোবাসা। 

জি এখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত বাংলাদেশের সিংহ পুরুষ,ইসলামী আন্দোলনের   অগ্রসেনা,  ওয়াজ মাহফিলের, সরাসরি কোরআনের তাফসির এর রূপকার, শহীদ মাওলনা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী। 

ইয়া আল্লাহ, তুমি তাঁর কবরটাকে জান্নাতের বাগান বানিয়ে দিও ।


১৬/০৮/২০২৩

এনামুল হক 

পাঁচবিবি, জয়পুরহাট



www.a2sys.co

আরো পড়ুন