ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চালানো বোমা হামলায় গাজার ঐতিহাসিক তুফফা এলাকার একটি পুরোনো মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে। ১৩ শতকের শেষ দিকে মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল, যা মুসলিম ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে পরিচিত। বার্তাসংস্থা টিআরটি জানিয়েছে, এই মসজিদটি ১৩ শতকে মামলুকদের দ্বারা তৈরি করা হয় এবং এটি গাজায় "আয়বাকি মসজিদ" নামে পরিচিত ছিল।
মসজিদটি গাজার মানুষের কাছে গৌরবের প্রতীক ছিল এবং এটি মুসলিম নেতা শেখ আব্দুল্লাহ আল-আয়বাকির নামে নামকরণ করা হয়েছিল। তিনি মিসরের মামলুক সুলতানি শাসনের প্রথম সুলতান ইজ আল-দ্বীন আয়বেকের আত্মীয় ছিলেন।
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলি বাহিনী এ হামলা চালায়, যার ফলে মসজিদের মিনার পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। ইসরায়েলের এই হামলা গাজার জনগণের মধ্যে এক নতুন স্তরের ভয় ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এটি গাজার পুরাকীর্তি ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম যে স্থাপনা ধ্বংস হল।
২০২৩ সালে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় বহু পুরাকীর্তি ও ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা এখন গাজার সিটিতে হামলা চালাচ্ছে এবং সেখানকার প্রায় ১০ লাখ মানুষের প্রতি সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫ লাখ মানুষ সরে গেলেও, এখনও অনেক মানুষ রয়ে গেছেন, যাদের জীবন এখন সংকটে।
এদিকে, জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন গাজার পরিস্থিতি নিয়ে একটি নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। এর পরেও, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে। গত দুই বছরে গাজার প্রায় ৬৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে প্রায় ২ লাখ মানুষ।
গাজার মানুষের মধ্যে এখন এক ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাড়িঘর, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল—সবকিছুই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। গাজার ভবিষ্যত এখন এক কঠিন সংকটে পরিণত হয়েছে।