ঢাকা, ২৫ আশ্বিন (১০ অক্টোবর):
রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি
(এনসিপি)। নিবন্ধনের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত হলেও দলের সঙ্গে কমিশনের প্রতীক ইস্যুতে
তৈরি হয়েছে জটিলতা। এনসিপি শুরু থেকেই তাদের প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ দাবি করে আসছে,
কিন্তু ইসির বর্তমান গেজেটে থাকা ৫০টি প্রতীকের তালিকায় শাপলা নেই। তাই ইসি বিকল্প
প্রতীক বেছে নিতে বললেও এনসিপি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার
তুষার বলেন, “তারা (ইসি) আমাদের জানিয়েছিল, ১৫০টি প্রতীকের মধ্যে শাপলা থাকবে। আমরা
তখনই নিবন্ধনের জন্য এই প্রতীক সংরক্ষণের আবেদন করি। এরপর জুলাই পদযাত্রায় সারাদেশের
সমর্থকেরা শাপলা নিয়ে রাস্তায় নেমেছিল। এখন এই প্রতীকের সঙ্গে আমাদের একটা অর্গানিক
সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, ফলে এর কোনো বিকল্প আমাদের কাছে নেই।”
অন্যদিকে সদস্য সচিব আখতার
হোসেন বলেন, “জাতীয় প্রতীকে যেমন শাপলা আছে, তেমনি ধানের শীষ ও তারকাও আছে—যেগুলো ইতিমধ্যেই
রাজনৈতিক প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ। সেক্ষেত্রে শাপলা বরাদ্দে কমিশনের কোনো বাধা থাকার
কথা নয়।” তবে নির্বাচন কমিশন এখনও পর্যন্ত শাপলা প্রতীক বরাদ্দে অনাগ্রহী। এ বিষয়ে
ইসি আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে চায়নি।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও কমিশন
সংস্কার কমিটির সদস্য জেসমিন টুলি বলেছেন, “তালিকার বাইরে নতুন প্রতীক দেয়ায় কোনো আইনি
বাধা নেই। চাইলে ইসি বিধিমালায় ছোট একটি সংশোধনীর মাধ্যমে শাপলা প্রতীক যুক্ত করতে
পারে। বিষয়টি সম্পূর্ণ কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।”
এ অবস্থায় এনসিপির শীর্ষ নেতারা
জানিয়েছেন, শাপলা প্রতীক না পেলে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত বিবেচনা করবেন। আখতার
হোসেন বলেন, “প্রতীক না দেওয়ার পেছনে কমিশনের সদিচ্ছার অভাব দেখা যাচ্ছে। এর পেছনে
রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রও থাকতে পারে। প্রতীক ইস্যুতে সৃষ্ট সংকটের দায়ভার সম্পূর্ণভাবে ইসিকেই
নিতে হবে।”
সারোয়ার তুষার আরও বলেন, “ইসি
বারবার আমাদের অযথা ভোগান্তিতে ফেলছে। মনে হচ্ছে তারা চায় না এনসিপি নির্বাচনে অংশ
নিক। তবে আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করবো। শাপলা প্রতীক ছাড়া আমরা নির্বাচনে যাব না।”
ইসির এ ভূমিকা নিয়ে নির্বাচনের
নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা।