মাসুদুর রহমান মজুমদার:
কুমিল্লায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় কারাগারে যাওয়া বৃটিশ নাগরিকের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। ৩১ অক্টোবর তাকে গ্রেফতারের পর দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরে সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে তৃতীয়বার আবেদনের প্রেক্ষিতে কুমিল্লার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দীন বৃটিশ এই নাগরিকের জামিন মঞ্জুর করেন। মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বৃটিশ ওই নাগরিক লন্ডনের ডিউজবার্গ শহরের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইলিয়াস মুকিত (৪২)। তিনি জন্মসূত্রে ব্রিটেনের নাগরিক। তার বাবা বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার মনোহরপুর এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল মুকিত।
জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর বিএনপি, জামায়াতসহ সমমনা রাজনৈতিক দল গুলোর ডাকা হরতালের দিন কুমিল্লার চকবাজারে বিএনপি নেতাদের মিছিলে ধাওয়া দেয় পুলিশ। এসময় সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টেয়ারশেল ছুড়ে। কয়েকজন নেতাকর্মীকে তখন গ্রেফতার করা হয়। কয়েকজন আহত হয়। অপরদিকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়লে কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৩০ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এঘটনায় বিএনপি নেতাদের নামের সঙ্গে নিজ বাসায় অবস্থান করা ওই বৃটিশ নাগরিকের নামও যুক্ত করা হয় বলে দাবি পরিবারের।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলার সর্বশেষ নামীয় আসামি ব্রিটিশ নাগরিক মোহাম্মদ ইলিয়াস মুকিত। ওই মামলার বাদী কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই জীবন কৃষ্ণ মজুমদার। মামলার নথিতে স্বাক্ষর করেন কোতয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ রকিবুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ।
আইনজীবী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এর আগে আমরা দুইবার অন্তঃবর্তীকালীন জামিনের আবেদন করলে তা না মনজুর করে আদালত। আজ স্থায়ীভাবেই জামিন দিয়েছেন আদালত।
এর আগে, মোহাম্মদ ইলিয়াস মুকিতের খালাতো ভাই ও বোনের জামাই আবদুল গফফার রুবায়েদ বলেন, উনি জন্মসূত্রে ব্রিটেনের নাগরিক। করোনার আগে উনি বাংলাদেশে আসেন। তিনি বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেন এবং বউকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাগজপত্র রেডি করছিলেন। তাই উনার দেরি হচ্ছিল। ২০২৭ সাল পর্যন্ত উনার ভিসার মেয়াদ আছে। কিছুদিন পরই চলে যাওয়ার কথা বউ নিয়ে। উনি বাংলা কথাও ঠিক মতো বলতে পারেন না। বাংলাদেশের রাজনীতির সম্পর্কে তার কোন ধারণা নেই। যেদিন এ ঘটনা সেদিন উনি বাসায়। নিজের চুল কাটার নাপিতও বাসায় নিয়ে আসেন। কোনদিন শপিং করতেও যান না। উনি বাইরে গেলে আরেকজন সাথে যাওয়া লাগে। অথচ উনাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। এই বিষয়ে পরিবার থানায় যোগাযোগ করেছে। পুলিশের অফিসার নাকি দুঃখপ্রকাশ করেছে।