ঢাকা | | বঙ্গাব্দ

বিশ্ব আলঝেইমার দিবস আজ

author
Reporter

প্রকাশিত : Sep 21, 2025 ইং
আলঝেইমার ছবির ক্যাপশন: আলঝেইমার
ad728

বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ২১ সেপ্টেম্বর পালিত হয় বিশ্ব আলঝেইমার দিবস। এ দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষকে আলঝেইমার ও ডিমেনশিয়ার মতো জটিল মস্তিষ্কজনিত রোগ সম্পর্কে সচেতন করা, ভুল ধারণা দূর করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।

আলঝেইমার শব্দটি প্রথম বর্ণনা করেছিলেন জার্মান মনোচিকিৎসক অ্যালয়েস আলঝেইমার ১৯০৬ সালে। সাধারণত ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন, যদিও এর সূত্রপাত আরও আগে হতে পারে। রোগটি মূলত স্মৃতিভ্রংশের মাধ্যমে ধীরে ধীরে ব্যক্তির চিন্তা ও পরিচয়কে প্রভাবিত করে, এমনকি পরিবার ও আত্মীয়দের ভুলে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ‘এপিওই ফোর’ জিন থাকলে ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পায়।

দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ আলঝেইমারের মতো স্মৃতি লোপজনিত রোগে আক্রান্ত। তবে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় কোনো কার্যকর পরিকল্পনা নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিমেনশিয়া শুধু ব্যক্তিকে নয়, পুরো পরিবারের আর্থসামাজিক কাঠামোকে প্রভাবিত করে। বৃদ্ধ ব্যক্তি ধীরে ধীরে সব ভুলে যাওয়ায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মানসিক ও অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে পড়ে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৭ সালে দেশের জন্য ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে জাতীয় পরিকল্পনার আহ্বান জানিয়েছিল। তবে বাংলাদেশ এখনও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। একইসঙ্গে, ২০২৫ সালের মধ্যে জনসংখ্যার গড় আয়ু বৃদ্ধির সঙ্গে প্রবীণদের সংখ্যা ও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালে দেশের প্রায় ১২ শতাংশ মানুষ ৬০ বছরের বেশি বয়সী হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত মানুষ সংখ্যা তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২৪ লাখে পৌঁছাবে।

বিশ্বের চিত্রও উদ্বেগজনক। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৫ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত। ২০৩০ সালে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৭ কোটি ৮০ লাখে পৌঁছাবে। প্রতিবছর ১৬ লাখ মানুষ ডিমেনশিয়ায় মারা যায় এবং চিকিৎসার বার্ষিক ব্যয় প্রায় ১৫৮ লাখ কোটি টাকা।

আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আজিজুল হক বলেন, রোগীর আইনি সুরক্ষা, পুনর্বাসন ও বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি না হলে পরিবার ও রোগীর ওপর আর্থিক, মানসিক ও সামাজিক চাপ বৃদ্ধি পাবে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু বলেন, ডিমেনশিয়া নিরাময়যোগ্য নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসা ও সঠিক জীবনধারা রোগের উন্নতি করতে সহায়ক। তিনি সুস্থ খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক পরিশ্রম, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার এবং ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিরোধের গুরুত্ব উল্লেখ করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর জানান, আলঝেইমার রোগের সঙ্গে পুরো পরিবার জড়িত থাকে। চিকিৎসার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা ও পরিবারভিত্তিক সহায়তা কাঠামো তৈরি করা প্রয়োজন। বর্তমানে ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে কর্মকৌশল ও জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।


 নুর/আকাশ টিভি





নিউজটি আপডেট করেছেন : Reporter

কমেন্ট বক্স
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ আকাশ টিভি২৪.কম
সকল কারিগরী সহযোগিতায় A2SYS