ঢাকা | | বঙ্গাব্দ

মসজিদে নামাজ আদায় থেকে নারীকে বঞ্চিত করার অধিকার দিল কে?

author
Reporter

প্রকাশিত : Nov 1, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:
ad728
টিউশনি শেষ করে বিকেলে বাসায় আসার পূর্বে একটু হাঁটার অভ্যাস করলাম, শীতকালের আগমন আসছে সময় খুব দ্রুত হারিয়ে যায়, দিনের এখন, ৫ টা ১৫ মিনিটেই আজান হয়ে যায় মাগরিবের। 

প্রায় অন্ধকার হয়ে যায়, মাগরিবের সময় থাকেই না বাসায় আসতে আসতে। শেষমুহূর্তে বাসায় এসে কোনরকম নামাজ আদায় করা হয়। মাঝে মাঝে পড়া ও হয়না।

 আমাদের দেশে প্রায় ৯০ শতাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমের বসবাস, মসজিদের শহর বলা হয়ে থাকে ঢাকাকে। আযানের সময় আযানের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে আমাদের দেশের পরিবেশ,কেনোনা ছোট-বড় প্রায় সব ধরনের মসজিদ রয়েছে পাড়ায়, পাড়ায় ও মহল্লায় মহল্লায়। আমার বাসার সাথেই রয়েছে মোট তিনটি মসজিদ আর আযানের শব্দ তো রয়েছেই তিন মসজিদের। তবে, আক্ষেপের সঙ্গে বলতে হচ্ছে আমাদের আশে- পাশের এতোগুলো মসজিদ থাকা সত্ত্বেও, কোনো একটি মসজিদেও কোনো স্থান নেই মহিলাদের নামাজের জন্য। নারীদের অসংখ্য কাজে প্রতিনিয়ত ঘর থেকে বের হতে হয়। বিশেষ করে বিকেলে ও সন্ধ্যায় ঘরের বাজার করতে নারীরা বাজারে এসে থাকেন,যাদের স্বামীরা চাকরির জন্য বা অন্যান্য কাজের জন্য বাহিরে থাকেন পরিবার ও নিজ শহর ও এলাকা থেকে দূরে। 

বাহিরে অবস্থানরত অবস্থায় যখন নামাজের সময় হয়ে যায়,তখন জায়গার অভাবে অনেক নারী নামাজ পরতে পারে না , ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও।

বাংলাদেশী বংশভূত ও বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্মগ্রহন করা, ডাক্তার মাহাথির মোহাম্মদের দেশ মালয়শিয়ায় ফ্যামিলি ট্যুরে গিয়েছিলাম , মহান আল্লাহ সেই সুযোগ দিয়েছিলেন আমাকে। আজকের উন্নত মালয়েশিয়ার রূপকার, স্থপতি, ধারক ও বাহক ডাক্তার মাহাথির মোহাম্মদ।

এই দেশটিতে শ্রম বাজারে রয়েছে প্রায় ৪ লাখের একটু বেশি বাংলাদেশের জনশক্তি। 

 মালয়শিয়া দেশটি প্রকৃতির দিকথেকে অত্যন্ত সুন্দর একটি দেশ, খানিক পরপর বৃষ্টি হয় সেদেশে। তবে আমাদের দেশের মত বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয় না তাদের প্যাক  - কাদামাটির ও পোশাক অপরিচ্ছন্নতার। সম্পূর্ণ দেশ ঢালাই করা মোজাইক টাইপসের বস্তু দিয়ে। আর পরিচ্ছন্নতার কথা তো বলেই শেষ করা যাবে না, খানিক পরপর পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এসে পরিষ্কার করে দিয়ে যায়, শহরের শুকনো ঝড়া পাতা, ধুলো - বালিকনা গুলোকে, রাস্তায় কিছু ফেললে রয়েছে বাড়তি জরিমানাও। শহর এতটাই পরিচ্ছন্ন যে কিছু ফেলতেও মন মানে না সেখানে।

এতো গেলো পরিচ্ছন্নতার বিষয়, মালয়শিয়ার একটি জিনিস আমাকে ভীষন ভাবে ভাবতে শিখিয়েছে, আর সেটি হলো সে দেশে প্রতিটি মসজিদেই নারীদের নামাজের জায়গা রয়েছে ছোট- বড় সব মসজিদে খুব সুন্দর ভাবে।

 যতদিন সফরে ছিলাম সেখানে আমি মোট তিনটি মসজিদে নামাজ পরার সুযোগ পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।

একটি হলো - মাসজিদ-ইন - ইন্ডিয়া যা বুকিনপিনতান শহরে অবস্থিত। যা আমাদের হোটেলের পাশেই ছিলো।
অন্যটি হলো - মাসজিদ - আল - জামিয়া (এই মসজিদটি বিশাল বড় একটি মসজিদ সাদা - কালো রঙের) ও আরেকটি ছিলো কোতোড়াইয়া নামক জায়গায় একটি কমার্শিয়াল বিল্ডিংএর তিন তলায় খুবই ছোট্ট একটি মসজিদ। 
 
শুধু তাই নয়, নামাজের জন্য মসজিদের কোনায় কোনায় বাস্কেটে লং হিজাব, এফ্রন ও জায়নামাজ রয়েছে। কিছু কিছু মসজিদে খেলনা ও রয়েছে যে সকল নারীরা তাদের ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে আসবে নামাজ পড়তে , সেই শিশুদের সময় কাটানোর জন্য রয়েছে খেলনার ব্যবস্থাও।
 কি চমৎকার! 
তাই না?

তবে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়া সত্ত্বেও, সে দেশে আযানের ধ্বনি তেমন উচ্চকণ্ঠে দেয়া হয় না, মাইকের আওয়াজ তেমন কানে যেয়ে বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় না।
 (২০২০ সনের জনসংখ্যা ও আবাসন শুমারি অনুযায়ী দেশটিতে বাস করে প্রায় ৬৩.৫ শতাংশ মুসলিম) মালাই হতে হলে অর্থাৎ, মালয়েশিয়ার একজন নাগরিক হতে হলে অবশ্যই তাকে ইসলাম ধর্মের অন্তর্ভুক্ত একজন মুসলিম হতে হবে। এটিই প্রথম ও প্রধান শর্ত। 

যদিও বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতেও যেমন - সৌদি আরব,ওমান ,কাতার, কুয়েত, বাহরাইন এসব দেশগুলোতে মসজিদে নারীদের সালাতের জায়গা রয়েছে।

বাহিরের বিশ্বের প্রতিটি দেশই, প্রতেকটি মানুষ অধিক কর্মঠ,আমাদের দেশের মানুষের চাইতেও অনেক বেশি কর্মঠ। 
মালয়শিয়ায় প্রায়,  ৬৫/৭৪/৭৮  বছর বয়সী নারীরাও কাজ করে হোটেলের রান্নার কাজ থেকে শুরু করে সেলসম্যানের কাজ পর্যন্ত। তাই তাদের ঘরের বাহিরে একটা বিশাল সময় অতিবাহিত করতে হয়। সেদেশের আরো একটি সাংবিধানিক আইন হলো - প্রতিটি মুসলিম নারীকে হিজাব পরা বাধ্যতা মূলক করে রেখেছে সেদেশের সরকার ঘরের বাহিরে কর্মসংস্থানে প্রতিটি জায়গায়। 

✍🏻 সালমা তাসনীম বিনতে মহিউদ্দিন। 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Reporter

কমেন্ট বক্স
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ আকাশ টিভি২৪.কম
সকল কারিগরী সহযোগিতায় A2SYS