আবু সুফিয়ান রাসেল।। কুমিল্লা জেলা সদর হাসপাতালে নেই ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ। ফলে পাবলিক প্লেসে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে হয় নবজাতকে। এতে লজ্জা আর বিব্রত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন সেবা নিতে আসা নবজাতকের মায়েরা। প্রধানমন্ত্রী ও আদালতের নির্দেশনা রয়েছে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার স্থাপনে।
সিভিল সার্জন বলছেন, নতুন ভবন হলে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার রাখা হবে। সূত্রমতে, শত শয্যার কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল। যা সদর হাসপাতাল নামে পরিচিত। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এ হাসপাতালে যাতায়াত করেন সেবার জন্য। তবে এ সেবা কেন্দ্রে নেই ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার। সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের নবাব ফয়জুন্নেসা ওয়ার্ডের নিচের একটি কক্ষ ব্রেস্ট ফিডিং এন্ড কেএমসি কর্নার লিখা রয়েছে। সে কক্ষটি ব্যবহার হয় অফিস রুম হিসাবে।
দায়িত্বে থাকা নার্স জানান, এখানে ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার নেই। বুড়িচং উপজেলার দুবলাচরের মরিয়ম আক্তার। তিনি এসেছেন তিন মাস বয়সী শিশুকে ইপিআই টিকা দিতে। শিশুর চিৎকারে তিনি সদর হাসপাতালের পুকুর পাড়ের বেন্সিতে বসে শিশুকে বুকের দুধ পান করাচ্ছেন। তিনি বলেন, সকালে বাড়ি থেকে এসেছি। রাস্তায় কোথাও দুধ পান করানোর জায়গা নেই। হাসপাতালেও নেই। তাই বাচ্চার তো জীবন বাঁচাতে হবে! অনেকে কটু কথা বলে। আমাদের ও লজ্জা হয়। কি করবো? একই অভিজ্ঞতা সদর দক্ষিণ থেকে আসা এক নবজাতকের মায়ের।
তিনি গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছেন। তিনি শিশু বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শের জন্য সদর হাসপাতাল এসেছেন। নাম প্রকাশ না করে এ নারী বলেন, যদি আমি লজ্জার কথা চিন্তা করি, তবে সন্তান কষ্ট পাবে। একজন মা তার সন্তানের কান্না সহ্য করতে পারে না। শুধু লজ্জা না, মা সন্তানের জন্য জীবন দিয়ে তাকে বাঁচিয়ে রাখে। যদি শিশু কনার্র থাকতো আমাদের জন্য ভালো হতো। সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সদস্য, সমাজকর্মী আইরিন মুক্তা অধিকারী বলেন, জেলা সদর হাসপাতাল। জেলার বড় একটি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র। আদালতের নির্দেশনা হলো সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ থাকতে হবে। তাই যতো দ্রুত সম্ভব এটি করা উচিত। কারণ এখানে প্রতিদিন শতাধিক মা আসেন শিশুদের নিয়ে। শিশুকে স্তন্যদানে মায়ের যদি দ্বিধা থাকে বা লজ্জা বা ভয় থাকে সেটি শিশুর জন্য অকল্যাণ। মায়ের জন্যও অসুখকর।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কাম জেনারেল হাসপাতাল তত্বাবধায়ক ডা. মীর মোবারক হোসেন জানান, আমাদের স্থান সংকট। ব্রেস্ট ফিডিং মূলত আউট ডোরে হওয়ার কথা। সদর হাসপাতালের আউট ডোরে দাঁড়ানোর জায়গা নেই, ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ করবো কিভাবে? নতুন একটি প্রস্তাবনা হলো পুকুরের পাড়ে যে নতুন ভবন হবে, সে ভবনের একটি অংশ ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার হিসাবে নির্ধারণ করা হবে।