ঢাকা | | বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় মহিলাদের নিয়ে সমাবেশ করল জামায়াতে ইসলামী

author
Reporter

প্রকাশিত : Feb 22, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:
ad728

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য  ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের বলেছেন, 

 দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নারী সমাজকে অগ্রসূচনা ভূমিকা রাখতে হবে।

রাসুল(সাঃ) এর যুগে হযরত আয়েশা, খাদিজা ও সুমাইয়াদের মতো অসংখ্য মহিয়সী নারী ইসলামের জন্য আত্মত্যাগের পাশাপাশি তাদের সম্পদ ও সময় দিয়ে ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার কাজে সহযোগিতা করেছিলেন। আপনারা তাদের উত্তরসূরী হিসেবে ইসলামের পক্ষে সমর্থন ও কাজ করার লক্ষে আজকের এ সমাবেশে সমবেত হয়েছেন।

আমরা চেয়েছিলাম শেখ হাসিনার পদত্যাগ। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় সে পদত্যাগের পাশাপাশি দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। যার ফলে সারাদেশের পাশাপাশি আমরা চৌদ্দগ্রামের মানুষও আজ মুক্ত ও স্বাধীনভাবে নির্দিধায় চলাফেরা করতে পারছি।

শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মহিলা সম্মেলনে আলাদা প্যান্ডেলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর এডভোকেট মুহাম্মদ শাহজাহান, উপজেলা জামায়াতের সেক্র্টোরী বেলাল হোসাইন।

মূল প্যান্ডেলে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগের সেক্রেটারী নুরুন্নিসা সিদ্দিকা, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী সাঈদা রুম্মান, রাজনৈতিক ও পাশর্^ সংগঠন বিভাগীয় সেক্রেটারী ডাঃ হাবিবা চৌধুরী সুইট, কুমিল্লা অঞ্চল সহকারী শাহীন আক্তার, ফেরদৌস সুলতানা। এরআগে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মহিলা জামায়াতের জেলা সেক্রেটারী শাহিনা আক্তার।



ডা.তাহের আরো বলেন,বিগত ১৫ বছর আমি আপনাদের কাছে আসতে পারিনি। আমাকে চৌদ্দগ্রামে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এ সময়ে আমার বাবা-মায়ের কবর পর্যন্ত জিয়ারত করার সুযোগ পাইনি। অনেক আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশি ও সাংগঠনিক নেতাকর্মী ইন্তেকাল করার পর আমার হৃদয়জুড়ে কান্নার ঢল এবং অশ্রু সংবরণ করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী ও গুন্ডাপান্ডাদের হামলা-মামলা ও অত্যাচার নির্যাতনের কারণে মৃতদের জানাযা, কাপন-দাফনে অংশগ্রহণ এমনকি কর্মী সমর্থকদের কোন ধরনের খোঁজখবর নেয়ার সুযোগ পর্যন্ত ছিল না। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিগত ১৫ বছরে আমাদের শত শত কর্মী-সমর্থককে নির্যাতনের মাধ্যমে পঙ্গু করে দিয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুলি করে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে। কয়েকশ বাড়িঘর লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। হাজার নেতাকর্মীকে বাড়িঘর ছাড়া করেছে। তাদের নির্যাতনে এই দীর্ঘ সময় আমাদের অনেক নেতাকর্মী ঢাকা, চট্টগ্রাম, পাশ^বর্তী ফেনী ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্খীর বাসা বাড়িতে অবস্থান নিয়ে দিনাতিপাত করেছে। কেউ কেউ মাঝে মধ্যে বৃদ্ধ ও অসহায় বাবা মা ও ভাই বোনদের এক নজর দেখার জন্য বাড়িতে গেলে মুজিবের লালিত সন্ত্রাসীরা তাদের ধরে বেদম মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে দিত। এইভাবে আওয়ামী দুঃশাসনের পুরো সময়টি আমরা এক আতঙ্ক উৎকণ্ঠা ও অসহায়ত্বের মধ্যে কাটিয়েছি। 


  

উল্লেখ্য, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর একই মাঠে অনুষ্ঠিত স্মরণকালের বিশাল যুব সম্মেলন সমগ্র চৌদ্দগ্রামবাসীর নিকট অভূতপূর্ণ সাড়া জাগানোর পর মহিলা সমাবেশটিও একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। মূল প্যান্ডেলে মহিলাদের বসার জন্য সাড়ে ১২ হাজার চেয়ার দেয়া হলেও সকাল ৯টার মধ্যেই প্যান্ডেলটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে স্থান সংকুলান না হওয়ায় প্যান্ডেলের বাইরে মাঠের পশ্চিম পাশের খালি জায়গা, চৌদ্দগ্রাম হাইস্কুলের সব শ্রেণীকক্ষ, স্কুল চত্ত্বরসহ আশ-পাশের খালি জায়গায় কার্পেট, ত্রিপল, পর্দা ও কয়েক’শ কম্বল বিছিয়ে দেয়া হলে সেখানেও কয়েক বাজার মহিলা বসে পড়েন। এর বাইরেও দাঁড়ানোর জন্য তিল ধারনের ঠাঁই ছিল না। সমাবেশটি যেন একটি মহিলা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। আয়োজক কমিটি বুঝতেই পারেনি যে, সমাবেশে এতো মহিলার উপস্থিতি হবে। আগত মহিলাদের জন্য বেশ কিছু সুবিধার ব্যবস্থা ছিল। এরমধ্যে মাঠের উত্তর পাশে ১০টি ভ্রাম্যমাণ শৌচাগার, মাতৃদুগ্ধ কর্ণার, চিকিৎসাকেন্দ্র, পান ও আপ্যায়নের জন্য পৃথক পৃথক সেলসহ প্রয়োজনীয় সেবার ব্যবস্থা করা হয়।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Reporter

কমেন্ট বক্স
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ আকাশ টিভি২৪.কম
সকল কারিগরী সহযোগিতায় A2SYS