ঢাকা | | বঙ্গাব্দ

চান্দিনা জামায়াতের এমপি প্রার্থী মোশাররফের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

author
Reporter

প্রকাশিত : Oct 17, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:
ad728
কুমিল্লা-৭ চান্দিনা সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অপার এক সম্ভাবনাময় আসন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের জনপ্রিয়তার কাছে এই আসনে; বিএনপি, এলডিপির কিংবা অন্যান্য রাজনৈতিক দল ধরাছোঁয়ার বাহিরে অবস্থান করছে। (অন্যতম কারণ হচ্ছে বিএনপি'র দলীয় কোন্দল) চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে ড. রেদোয়ান আহমেদ (এলডিপির মহাসচিব) ইতোমধ্যেই এ আসনে এক সুপ্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবশালী নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তাঁর অভিজ্ঞতা, জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে এ আসনে তাঁকেই একমাত্র হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে; অন্য কোনো প্রার্থী এখনো তেমন শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারেননি।

তার ধারাবাহিকতায় ৫ই আগস্টের পর চান্দিনা উপজেলা ও পৌরসভা‌ জামায়াতে ইসলামীর সকল সাধারণ সমর্থক থেকে শুরু করে ২০০ অধিক রুকন মিলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে নিজেদের মধ্যে কথা বলে একজন যোগ্য মানুষকে আবিষ্কার করেন তিনি হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিবির সভাপতি ব্যারিস্টার মোস্তফা শাকেরুল্লাহ। (আইনজীবী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট) ৫ আগস্টের পর চান্দিনার বিভিন্ন প্রোগ্রাম, ইফতার মাহফিলসহ সব জায়গায় চান্দিনা পৌরসভা এবং উপজেলার পক্ষ থেকে তাকে নিয়ে অঘোষিত সংসদ সদস্য হিসেবে প্রচার করা হয়। 

তারই ধারাবাহিকতায় চান্দিনা সকলের এই মতামত জেলাকে জানানোর পর জেলা জানায় আমাদের সাংগঠনিক নিয়মের ভিত্তিতে চলতে হবে সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী জনশক্তির গোপন ভোটের মাধ্যমে সংসদ সদস্য মনোনীত করা হবে তাই আপনারা আগে ভোটের ব্যবস্থা করুন তারপর আমরা ফলাফল দেখে কাকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেয়া যায় সেইটা বিবেচনা করবো।

পরবর্তীতে সংগঠনের নিয়ম অনুসারে জনশক্তিদের গোপন ভোটের মাধ্যমে সংসদ সদস্য মনোনীত করা হবে বলে দিনক্ষণ ঠিক করা হয় এবং ওই দিন সকল জনশক্তিরা চান্দিনা আল আমিন ইসলামীয়া কামিল মাদ্রাসার অডিটোরিয়ামে চান্দিনার সাবেক দায়িত্বশীলগন সহ নিজ নিজ ভোট প্রদান করেন।

ভোট দেয়ার পরবর্তীতে লম্বা সময় ধরে কুমিল্লা উত্তর জেলা এই ভোটের ফলাফল প্রকাশ না করলে চান্দিনার সকল রুকন এবং অন্যান্য জনশক্তির মধ্যে একধরনের চাপা ক্ষোভ আবির্ভাব হতে থাকে। চান্দিনার জনশক্তিরা কোন উপায় না পেয়ে তারা যে কোন মাধ্যমে ফলাফল জানার চেষ্টা করেন এবং শেষ পর্যন্ত জেনে যায় যে ঐদিন ভোটে ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে ব্যারিস্টার মোস্তফা শাকেরুল্লাহ সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। 

বারবার জেলার কাছে এ বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে তারা বিভিন্নভাবে এড়িয়ে যায় তারা কোনো সদুত্তর দেয়নি এবং ফলাফলও ঘোষণা করেনি। 

৩০ নভেম্বর ২০২৪ চান্দিনা পাইলট স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয় জামায়াতে ইসলামী চান্দিনা উপজেলার  সর্ববৃহৎ কর্মী সম্মেলন। দিনটিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চান্দিনার সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল প্রবল উৎসাহ ও প্রত্যাশা—সবার মনে একটাই প্রশ্ন, আজই কি কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মজিবুর রহমান সাহেব এমপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন? (তিনি ছিলেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি) অনেকে নিশ্চিত ভাবেই ধরে নিয়েছিলেন, তিনি আজ সেই বহুল প্রতীক্ষিত নামটি জানিয়ে দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অজানা এক কারণে তিনি কোন নাম ঘোষণা করেন'নি।

একটা সময় পরে সকল রুকনরা যখন এক প্রকারের জেলার বিরুদ্ধে সরাসরি কথা বলা শুরু করলেন; তখন তারা দ্বিতীয়বারের মতো আবারও সকল রুকনদের কাছ থেকে ভোট নেন। কিন্তু অজানা কারণে তখনও তারা ভোটের কোন ফলাফল জানাননি। মাঝখানে দীর্ঘ একটা সময়ের পর হঠাৎ করে জেলা ঘোষণা করলেন যে চান্দিনা উপজেলা নায়েবে আমির মাওলানা মোশারফ হোসেন সাহেব আগামী নির্বাচনে চান্দিনা থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচন করবেন। 

কিন্তু পৌরসভা এবং উপজেলার রুকনরা, এটা মেনে নিতে পারেননি কারণ সকলেরই জানা আছে তারা কাকে ভোট দিয়েছেন যখন তাদের নিজেদের মধ্যে জিনিসটা স্পষ্ট যে আমরা সকলে তো ভোট দিয়েছি অন্য আরেকজন ব্যক্তিকে এখানে কি করে মাওলানা মোশারফ হোসেন সাহেবের নাম এমপি হিসেবে ঘোষণা করা হলো?

জেলাকে এ বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন করা হলে তখন তারা জানায় যে কেন্দ্র থেকে মাওলানা মোশাররফ হোসেনের নাম দেয়া হয়েছে এখানে জেলার কোন হাত নেই। কিন্তু একটি সূত্রের ভিত্তিতে জানা যায় অধিকাংশ ভোট পাওয়ার পরেও কুমিল্লা মহানগরীর আমির দ্বীন মোহাম্মদ, কুমিল্লা উত্তর জেলা আমির অধ্যাপক আবদুল মতিন, কুমিল্লা উত্তর জেলা সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম শহীদ, নায়েবে আমির অধ্যাপক আলমগীর সরকার সহ আরো কয়েকজন মিলে ব্যারিস্টার মোস্তফা শাকেরুল্লাহ নাম বাদ দিয়ে সুপরিকল্পিত ভাবে তারা মাওলানা মোশাররফ হোসেনকে এমপি প্রার্থী হিসেবে চান্দিনার উপর চাপিয়ে দেন। 

পরবর্তীতে সকল রুকনরা ঐক্যবদ্ধভাবে এ বিষয়টা নিয়ে জেলার কাছ থেকে সঠিক ব্যাখ্যা দাবি করেন, কিন্তু তারা বারংবার বিষয়টি কে এড়িয়ে গিয়ে আনুগত্যের দোহাই দিয়ে এবং রুকনদেরকে এ বিষয়ে কোন কথা বললে তাদের রুকন পদ মুলতবি ঘোষণা করা হবে এই বলে হুমকি দিতে থাকেন। কিন্তু চান্দিনা রুকনরা নাছর বান্দা তারা জেলাকে এ বিষয়টি নিয়ে বারংবার প্রশ্ন করতে থাকেন। (উল্লেখ্য যে ইতিমধ্যে জেলা চান্দিনা উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক থানা সভাপতি বর্তমান চান্দিনা পৌরসভার রুকন ও কর্মপরিষদ সদস্য মু. আবু হানিফের রুকন পদ মুলতবি ঘোষণা করেছেন)

কোন উপায় না পেয়ে জেলা আমির তৃতীয়বারের মতো কেবল চান্দিনা পৌরসভার রুকনদের কাছ থেকে আবারও ভোট গ্রহণ করেন; আল্লাহর ইচ্ছায় সেখানেও সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে ব্যারিস্টার মোস্তফা শাকেরুল্লাহ পক্ষে ভোট দেন। কিন্তু জেলা তৃতীয়বার ভোট গ্রহণ করার পরেও কিসের ফায়দা কিংবা কার প্ররোচনায় পড়ে তারা তারপরেও প্রার্থী পরিবর্তনের বিষয়টা গুরুত্ব না দিয়ে তাদের মতো করে তারা কার্যক্রম চালিয়ে যান। 

সর্বশেষ তারা চান্দিনার জনশক্তিকে জানান যেহেতু একটা নাম এসে গেছে আপনারা তাকে নিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যান মাঠ ফাঁকা রাখলে হবে না কাজ করতে হবে। এই দিক দিয়ে আমরা কেন্দ্রের সাথে কথা বলে আপনাদের দাবি অনুযায়ী প্রার্থী পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনা করব। 

জেলা আমিরের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সকলে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং বিভিন্ন ইউনিয়ন, পৌরসভার ওয়ার্ডে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং নির্বাচনী সমাবেশ করে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে যান। কিন্তু বিধিবাম জেলা চান্দিনার জনশক্তির দাবির ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না, জেলা এই ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেবে বলে আশা না দেখে জনশক্তিরা জেলাকে সাফ সাফ জানিয়ে দেন আজ থেকে আমরা আর কোন কাজ করবো না যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আপনারা কোন পদক্ষেপ নিবেন ততদিন পর্যন্ত আমরা সকল ধরনের সাংগঠনিক কাজ বন্ধ রাখবো। 

কোন উপায় না পেয়ে জেলা আমির পুনরায় ০৯ অক্টোবর ২০২৫ পৌরসভা এবং উপজেলার কর্মপরিষদ সদস্যদের কে নিয়ে যৌথ একটি কর্মপরিষদ বৈঠক করেন। বলে রাখা ভালো ইতিমধ্যে এই বিষয়গুলো নিয়ে রুকনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলা শুরু করেছেন কেউ কেউ ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দিচ্ছেন।

তারপর কর্মপরিষদ বৈঠকে জেলা আমির তার বক্তব্য তুলে ধরেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রুকনরা যে প্রশ্ন তুলছেন সেগুলো যাতে না করে এ ব্যাপারে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন এবং রিসেন্টলি প্রকাশ হওয়া ভিডিওর ব্যাপারে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে যাতে কেউ এমন কাজ না করে এই ব্যাপারে সকলকে তিনি নসিয়াত করেন। 

সর্বশেষ তাৎক্ষণিক তিনি কর্মপরিষদ সদস্যদের কে বলেন যে আপনারা সকলে মিলে আমাকে তিনটি নাম দেন যাতে করে আমি কেন্দ্রে বিষয়গুলো ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারি এবং আপনাদের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের নামগুলো কেন্দ্রে বলতে পারি‌। যদিও ঐ সময় সকলে তিনটি নাম দিতে কিছুটা অনিচ্ছা প্রকাশ করেন, কারণ তারা ইতিমধ্যে একজনের নামই বলে আসছিলেন। কিন্তু জেলা আমিরের কথার ভিত্তিতে তারা তিনটি নাম দেন। এখানেও বলে রাখা ভালো কর্মপরিষদের সদস্যরা বলেছিলেন আমরা লিখিতভাবে নামগুলো দেই যাতে কে কার নাম দিয়েছে সেইটা যেন অন্য কেউ না জানতে পারে। কিন্তু জেলা আমিরের নির্দেশ ছিলো লিখিত নয় মৌখিকভাবে সকলে নাম বলতে হবে যাতে করে একজনের দেয়া নাম অন্যজনও শুনতে পারে।

তখন সকল কর্মপরিষদ সদস্যরা মৌখিকভাবে যে তিন জনের নাম দেন তাঁরা হলেন, ১) ব্যারিস্টার মোস্তফা শাকেরুল্লাহ। ২) মাওঃ মিজানুর রহমান (উপজেলা আমির) ৩) অধ্যাপক এ কে এম আনোয়ার হোসাইন (এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী কুমিল্লা জেলা উওর)

ঐ বৈঠকে উপজেলা আমির মাওঃ মিজানুর রহমান তাঁর বক্তব্যে কেন প্রার্থী বদলানো উচিত এবং জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হওয়ার পরেও দেশের কোন কোন জেলাতে দ্বিতীয় বার প্রার্থী বদলানো হয়েছে সেই বিষয়ে তিনি বিস্তারিত তোলে ধরেন।

বৈঠকে চান্দিনা পৌরসভার সেক্রেটারি ইয়াহিয়া রায়হান অভিযোগ করে বলেন, ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের প্রার্থী মাওলানা মোশারফ হোসেনের পক্ষে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। কিন্তু সকাল দশটার মধ্যেই আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা কেন্দ্র দখল করে জামায়াতে ইসলামের এজেন্টসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন।

তাৎক্ষণিকভাবে তিনি মাওলানা মোশারফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে জানতে পারেন যে তিনি নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। এতে সবাই হতবাক হয়ে যান—কর্মীদেরকে মাঠে রেখে তিনি নিরাপদে ঘরে অবস্থান করছেন, এমন আচরণ কতটা যুক্তিসঙ্গত—এ প্রশ্ন থেকেই যায়।

ইয়াহিয়া রায়হান আরও বলেন, নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ কর্তৃক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে যাওয়ার পরও মাওলানা মোশারফ হোসেন একদিনের জন্যও তার খোঁজ নেননি, এমনকি জেলে দেখা করতেও যাননি।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, উপজেলা নির্বাচনে যিনি এ রকম ন্যাক্কারজনক আচরণ করেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার পক্ষে আমরা কাজ করলে তিনি সত্যিই কি কর্মীবান্ধব হয়ে মাঠে লড়বেন? আর নির্বাচনে পরাজিত হলে যাতে কর্মীদের ওপর হামলা-মামলার শিকার না হতে হয়, সে ব্যাপারে তিনি আদৌ কোনো দায়িত্ব নেবেন—এর নিশ্চয়তা কে দেবে?

একই বৈঠকে পৌরসভা কর্মপরিষদের সদস্য কাউছার আলম প্লাবন বলেন, ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে তিনি এবং তার এলাকার অন্যান্য কর্মীরা গল্লাই ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ সকালবেলা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে নেয়। তারা মারধর করে আমাদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়।

এ সময় আমরা নির্বাচন কমিটি ও প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনোভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে দায়িত্বশীলরা আমাদের জানান, “আপনারা কেন্দ্র ছেড়ে চলে যান, যা হওয়ার তাই হবে।

সর্বশেষ জেলা আমির অধ্যাপক আবদুল মতিন সাহেব আস্বস্ত করেন চান্দিনার প্রার্থী বদলানোর বিষয়ে জেলা থেকে খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে কেন্দ্রে আলোচনা করা হবে‌। তাৎক্ষনিক উপজেলা আমির মাওলানা মিজানুর রহমান আগ্রহ প্রকাশ করেন যে কেন্দ্রে কথা বলার সময় যেন চান্দিনা থেকে সর্বনিম্ন দুইজন দায়িত্বশীল সাথে নেয়া হয়; কিন্তু জেলা আমির এইটা নাকোচ করেন। তিনি জানান যেহেতু সংগঠনের সকল রুকন ও সাধারণ সমর্থকরা মাওঃ মোশাররফ হোসেন এর বিষয়ে আপত্তি করেছে তিনি যত দ্রুত সম্ভব কেন্দ্রের সাথে এই বিষয়ে কথা বলে এইটার সঠিক সমাধান করার চেষ্টা করবেন।

কিন্তু গত ১১ অক্টোবর ২০২৫ কুমিল্লা উত্তর জেলা রুকন সম্মেলনে তার বক্তব্যে আনুগত্যের উপর জোরদার করে অস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে চান্দিনাতে যাকে ইতিমধ্যে মনোনীত করা হয়েছে তাকে নিয়ে নির্বাচন করতে হবে এ ব্যাপারে কোন প্রশ্ন করা যাবে না।

বিঃদ্রঃ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এমপি প্রার্থী নিয়ে স্থানীয় জনশক্তিদের মধ্যে দুই-তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায় কিন্তু চান্দিনাতে সেইটা ব্যতিক্রম। চান্দিনায় কোন ধরনের কোন গ্রুপিং নেই সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে একজন স্বচ্ছ নেয়নিষ্ঠাবান প্রার্থী চায়। (কেউ যদি মনে করেন আমি মোস্তফা শাকেরুল্লাহ পক্ষে সাফাই গাইছি তাহলে কেন্দ্রের তত্বাবধানে একটি ভোটের আয়োজন করা হোক, তাহলে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে যে চান্দিনার জনশক্তিরা কাকে এমপি হিসেবে চায়)

এই পর্যায়ে এসে চান্দিনা সকল রুকন এবং সাধারণ জনশক্তি যারা রয়েছেন সকলের মনে প্রশ্ন কেন কুমিল্লা উত্তর জেলা এমনটা করছেন কেন চান্দিনা জনসাধারণের সঠিক বক্তব্যটা কেন্দ্রে তুলে ধরছেন না। যদি কুমিল্লা উত্তর জেলা চায় তাহলে কেন্দ্রীয় যে কোন দায়িত্বশীলকে নিয়ে এসে একটা প্রোগ্রাম করে সেখানে সরাসরি রুকনদের মতামত নেয়া হোক। কেন্দ্র জিনিসটা দেখুক যে চান্দিনায় জনশক্তিরা কাকে নিয়ে আগামী নির্বাচনে লড়াই করতে চায়। 

আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এমন একজন মানুষ চাই যাকে দিয়ে আমরা চান্দিনাকে একটি উর্বর ইসলামী ভূমি হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এ ব্যাপারে প্রথম থেকে দাবি জানিয়ে আসছি এবং এখনো আমরা এ ব্যাপারে অনড়। যদি কুমিল্লা উত্তর জেলা চায় তাহলে আমরা যে কোন জায়গায় সকল রুকনরা মিলে বসে কেন্দ্রীয় মেহমানের সামনে সরাসরি ভোট দিয়ে জানিয়ে দেব যে আমরা কাকে চাচ্ছি। 

কিন্তু কুমিল্লা উত্তর জেলা যদি আমাদের দাবিগুলো উপেক্ষা করে তাদের মন মত কোন কিছু চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে তাহলে এ ময়দান ধ্বংস হয়ে যাবে। 

ইতিমধ্যে রুকন'রা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন তাহলে অন্যান্য রাজনৈতিক দল আর জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে তফাৎ রইলো কোথায়। যদি এভাবে চলতে থাকে অদূর ভবিষ্যতে চান্দিনা জামায়তে ইসলামের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য কোন জনশক্তি থাকবে না। 

প্রশ্ন উঠছে কেন্দ্র সকল কিছুর খবর রাখতে পারে তারা চাইলে কুমিল্লা উত্তর জেলা কে বাদ দিয়ে সরাসরি চান্দিনার সংগঠনের অভ্যন্তরী যে সংগ্রাম চলছে সেটার খোঁজখবর নিয়ে সঠিক একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারে তা না হলে খুব শীঘ্রই সবকিছু নিঃশেষ হয়ে যাবে।

(লিখাটি চান্দিনা উপজেলা শিবিরের সাবেক সাথী সালাহ উদ্দিন রিপনের টাইমলাইন থেকে নেওয়া) 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Reporter

কমেন্ট বক্স
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ আকাশ টিভি২৪.কম
সকল কারিগরী সহযোগিতায় A2SYS