আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুমের অভিযোগে দায়ের করা দুটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পরোয়ানাভুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বুধবার (২২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা না হলে তাদের বিষয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে তারা চাইলে স্বেচ্ছায় হাজির হতে পারেন, অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেফতার করে হাজির করতে পারে।”
তিনি আরও জানান, হাজির না হলে তাদের বিষয়ে দুটি জাতীয় পত্রিকায়—একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি—বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে এবং পরবর্তী হাজিরার তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
প্রসিকিউটর তামিম বলেন, “ট্রাইব্যুনাল চাইলে তাদের জামিন দিতে পারেন, আবার প্রয়োজনে কারাগারে পাঠানোরও নির্দেশ দিতে পারেন।” তিনি জানান, প্রসিকিউশন এখন পর্যন্ত গ্রেফতারের বিষয়ে কোনও তথ্য পায়নি, তবে ট্রাইব্যুনালের কাছে তথ্য থাকলে বুধবার তা জানানো হবে।
এর আগে গত ৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে বিরোধীদের গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলার অভিযোগ আমলে নেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এসব মামলায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মামলাগুলোর অভিযোগে বলা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে র্যাবের টিএফআই ও জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেন্টারে (জেআইসি) বন্দিদের ওপর নির্যাতন, অপহরণ ও গুমসহ নানা মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়। এসব অপরাধে শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা, সাবেক মন্ত্রী, সাবেক পুলিশপ্রধান ও র্যাব কর্মকর্তাসহ একাধিক সেনা কর্মকর্তা অভিযুক্ত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত,
শেখ হাসিনার পতনের পর গত বছরের ৫ আগস্ট বন্দিশালা থেকে মুক্তি পাওয়া ভুক্তভোগীদের অভিযোগের
ভিত্তিতেই এই দুই মামলার সূত্রপাত। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান,
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা কোনো
সরকারি দায়িত্বে থাকতে পারবেন না।
আকাশ টিভি/ন